অমৃতের সন্ধানে-১২
এই জোৎস্না ধোয়া সপ্নীল রাতে সান বাধানো পুখুরের ঘাটে মানিকের পাশে বসে সব কিছু কেন যেন আবার নতুন করে শিউলির সামনে এসে হাজির হলো।
জ্যোৎস্না রাত মানিকের খুব প্রিয়, তবে এর সৌন্দর্যের জন্য যতটা না তার থেকে বেশী আলো আধারি পূর্ণ লুকোচুরির মত পরিবেশের জন্য। দিনের আলো তাদেরই কাম্য যাদের জীবন প্রাপ্তিতে ভরা। তাতে প্রাপ্তির সবটুকু যাচাই বাছাই করে নেয়া যায়। এতে আরো বাড়তি সুবিধা হচ্ছে যে প্রাপ্তিটা অন্যান্যদেরকে দেখানোর এবং হাততালি পাওয়ার অনন্য স্বাদটাও উপভোগ করা যায়।
কিন্তু মানিকের মত যাদের খাতাটা অপ্রাপ্তিতে পূর্ণ তাদের জন্য এই আলো আধারিই উত্তম। কারণ এমন পরিবেশে জোর করে ঠেলে বেরিয়ে আসা লজ্জা আর মুখের উপর ভেষে উঠা যন্ত্রণার রেখা গুলো অন্যের চোখের আড়াল করে ঢেকে রাখা যায়।
শিউলি ওর মুখের দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে মানিকের কথা গুলো শুনছিলো আর ভাবছিলো সব নতুন করে।
-নিজের বেদনা লাঘবের উপায় হচ্ছে অন্যের বেদনা লাঘবে নিজেকে নিয়োজিত করা।
নীরবতা ভেঙ্গে ছোট্ট একটা নিশ্বাস টেনে মানিক বললো।
– এ ব্যপারটাতে আপনাদের অনেক সুবিধা, আপনারা দুজনইতো সেবার মহাব্রত গ্রহন করেছেন। একে অপরের সাহায্য নিয়ে মন ভরে সেবার কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করবেন। অবশ্য ভুলার মত অত বেদনা আপনাদের আছে কিনা জানি না।
শিউলির ইচ্ছে হলো ওকে বলতেঃ
– কতটুকুই বা জানো তুমি আমার সম্পর্কে। ভুলার মত অনেক বেদনা এই বুকেও লুকিয়ে আছে, যা তোমার মত আমিও কাউকে ভাগ দিতে পারি না আর দিতেও চায় না। তোমার মত আমার বেদনাগুলোও আমার একান্ত আপনার।
-আর তুমি বেলালের কথা বলছো, ও হচ্ছে বর্ধিষ্ণু বটবৃক্ষ- শাখা শেকড় বিস্তার করে নিজের প্রাধান্য বিস্তারে ব্যস্ত। অন্যকে সেবা করা বা অন্যের কথা ভাববার সময় তার কোথায়। শাখা প্রশাখা বিস্তৃত বটবৃক্ষের নিচে বাইরের সব ঝড় ঝঞ্জা থেকে বাচার জন্য নিশ্চিন্তে আশ্রয় নেয়া যায় সত্যি কিন্তু সেটাইকি সব কিছুর শেষ কথা।
ভাবলো এখনই ওর মনের সব লুকানো না বলা কথা ব্যাথা বেদনা অভিব্যক্তির সবটুকু উজাড় করে মানিককে বলবে। বলবে বেলালের কথাও যা ও কাউকেই বলতে পারিনি এ যাবত।
কে যেন ওর কানে কানে বলতে লাগলো- তোমার অপেক্ষার পালা শেষ হওয়ার সময় এসেছে, তোমার সব কথা শোনার মত বোঝার মত মানুষ তুমি পেয়েছ, সব বলে সব কিছুরই ভাগ দিয়ে নিজেকে হালকা কর।
আত্মবিসৃত হয়ে ভাবতে ভাবতে হটাৎ করে সম্বিৎ ফিরে পেতেই শিউলি বুঝতে পারলো যে, মানিকের মুখের উপর ঝুকে গভীর ভাবে ওকে দেখছিলো এতোক্ষন। শিউলি নিজেকে একটু গুটিয়ে নিয়ে বসলো।
মানিকের মুখের উপর ভেষে ওঠা কোন অভিব্যক্তি শিউলি পরিস্কার না দেখতে পেলেও, নিজের মুখের একটা অবিকল প্রতিবিম্ব ও যেন দেখছিলো। সে মুখটা ওর কাছে খুব পরিচিত। চাঁদের আলোতে মানিকের মুখের উপর ফুটে ওঠা প্রকৃতই কোন রেখাই দেখতে না পেলেও মনের আয়নাই ওর নিজের বেদনাপ্লুত মুখের একটা অবিকল প্রতিচ্ছবী যেন ভেষে উঠলো।
-নিজের মনের কথা আপন কাউকে বললে মনটা হালকা হয়।
মানিকের কথায় শিউলি একটু চমকে উঠলো। এই স্বল্প কথায় মানিক কি বোঝাতে চায়লো তা ওর কাছে পরিস্কার হলো না।
বেলালের মত একজন আশ্রয়দাতাকে পেয়েছে না চাইতেই। বেলালের সাথে ওর পরিচয়টা অনেকদিনের। কিন্তু বেলালকে নিয়ে ওর ভাবনাটা বাস্তবতার কারণে, সম্পর্ক আর সামাজিকতার কারণে।
কিন্তু সেগুলো মনের গভীরে থাকা ভাবনাগুলোর মত নয়, যা অবচেতন মনে চিন্তা করে মানুষ। যে ভাবনাগুলো এমনিতেই আসে, কোন পরিস্থিতির কারণে নয়।
সেই অর্থে মানিকের সাথে ওর পরিচয়টা খুবই অল্প। কিন্তু মানিকের সব কথা বেদনা অনুভূতি সবই শিউলির যেন জানা পরিচিত। সেগুলো ওর নিজের সব ব্যথা বেদনা অনুভূতির সাথে মিশে একাকার হয়ে একদম মনের গভীরে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে। মানিককে নিয়ে চেতন মনে চিন্তার দরকার হয় না ওতো শিউলির অবচেতন মনের ভাবনা।
মানিক হচ্ছে প্রকৃতির মত। খোলা আকাশের নিচে বসে বাতাসে অবগাহন করলে বা বৃষ্টিতে শিক্ত হলে তা যেমন দেহ মন সব কিছুকে ভরিয়ে দেয় মানিক ঠিক তেমনি। আর বেলাল হচ্ছে আলোকোজ্জ্বল প্রাসাদে বসে শাওয়ারে স্নান করা বা এসির বাতাসে দেহ জুড়ানোর মত।
আশ্রয়ের ব্যপারটা দানের, তায় একতরফা, অর্জনের কোন প্রয়োজন নেই, গ্রহীতার তেমন কোন ভূমিকা নেই। দাতার ভূমিকায় মুখ্য। কিন্তু অধিকারের প্রশ্ন যেখানে সেখানেতো অর্জনের তাড়না আছে।
মানিককে কি ভাবে বলবে -আমাকে বলে দাও আমি এখন কি করবো। কিছু ধর্মীয় অনুষ্ঠান করে বিয়ে নামক সামাজিক বন্ধনটা হয়ে গেলেই কি মনের ভিতর লুকিয়ে রাখা সব আশা আকাঙ্ক্ষার সমাপ্তি হবে? বিয়ের সানায়ের বাঁশীঁ কি অবুঝ মনটাকে শাসনে এনে সব ধরণের চাওয়ার প্রতিদানে যা কিছু পাওয়া যায় তা দিয়েই চাওয়ার সব শক্তিকে নিঃশ্বেস করে দিতে পারবে!
-আচ্ছা মানিক বেলালকে তোমার কেমন মনে হয়?
শিউলির প্রশ্নে কিছুটা অপ্রস্তুত হলো মানিক।
বেলালকে সেই অর্থে চেনে না মানিক। ওর ব্যপারটা নিয়ে ওমন ভাবে কখনও ভেবেও দেখেনি। আর ও যে নিজেই কি চায় সেটাও কখনো গভীর ভাবে ভেবে দেখিনি মানিক।
কি জবাব দেবে ও?
মানিক জানে যে, সব প্রশ্নের জবাব হয় না। সব প্রশ্নের জবাব দেয়া যায় না। আর এমন একটা প্রশ্নের জবাব দেয়ার ভাষাও ওর জানা নেই।
ছোট কালে মায়ের অভাবটা বোধ করলেও তখন তার কথা খুব একটা মনে হতো না মানিকের। তবে একটু বড় হওয়ার পর থেকে মায়ের কথা খুব মনে হয়। মা কেমন দেখতে ছিল, কি ভাবে কথা বলতো ইত্যাদি নানা চিন্তা ভীড় জমায় মনের কোনে।
পার্থিব জ্ঞানের এটাই বোধহয় একটা সমস্যা। দেখা বা জানা অন্য কিছুর সাথে তুলনা করে অবুঝ মন নিজেরটা যাচায় করে দেখার তাগিদ অনুভব করে। ছোট কালে তুলনা করার বা আমিত্বের সে জ্ঞান ছিল না বলে সমস্যা ছিল না। কিন্তু বড় হওয়ার পর সব কিছুর মত এ সাধারন প্রাপ্যটা হারানোর বিষয়টা অসাধারন হয়ে মনকে দোলা দেয়।
ম্যাট্রিক পরীক্ষা শেষ। বেশ কিছুদিন স্কুল ছুটি। মানিক এলো নানীর কাছে। তখন মায়ের কথা জিজ্ঞেস করতে লাগলো নানিকে। অনেক কথা- মা কিভাবে মারা গেল, মরার সময় কাছে কে কে ছিল ইত্যাদি। যে কথাগুলো এর আগে কখনো জিজ্ঞেস করেনি মানিক।
একটু অবাকই হলেন রোকেয়া বেগম।
বুঝলেন মাকে যেন মানিক ওর মনের ভিতর অনুভব করতে চায়।
এর আগে কখনো মানিক মায়ের কবরটা দেখেছে কিনা মনে পড়ে না। সেবার ওর নানীকে সাথে নিয়ে ওর মায়ের কবরটা দেখতে গেল।
মানিকের মনে হয়েছিলা সেখানে বোধহয় মাকে খুজে পাবে। আর তাকে তুলে নিজের মনের মনিকোটায় বন্দি করে সব সময় সাথে সাথে রাখবে।
কবরটা বাধায় করা হয়নি, অযত্নে ধ্বসে পড়ে আশেপাশের অন্যান্য কবরের সাথে মিশে গেছে। নানী যা দেখালেন তাতে কবরটা কোথায় ছিল সেটা মোটামুটি বোঝা গেলেও কোনটা যে ওর মায়ের কবর সঠিক করে সেটা বোঝা সম্ভব হলো না।
মানিকের মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। এ যেন অতি যত্নে লালীত আশার যবনিকাপাত। ওর চোখ দুটো অশ্রুসজল হয়ে উঠলো।
কিছু বললো না মানিক, কারো বিরূদ্ধে কোন অভিযোগও করলো না। ঐ জায়গাটাতে অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে রইলো নিষ্পলক দৃষ্টিতে। বোধহয় নিজের মনে মাকে খোজার শেষ চেষ্টা করলো।
ঠিক ঐ সময় ঐ বংশেরই অন্য কেউ একজন মারা যাওয়াই তাকে কবর দেয়ার জন্য একদল লোক লাশ কাধে আসলো সেখানে। সবার চোখে মুখেই শোকের ছায়া। স্বজন হারানোর কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে উঠল।
ওর মায়ের কবরটা যেখানে মোটামুটি ঐ জায়গাতেই একটা কবর খুড়ে দাফন সম্পন্ন করে সবাই চলে গেল।
মানিক চেয়ে চেয়ে দেখলো সবই। সবাই চলে গেলে মানিক পুনরায় ঐ জায়গাটাতে গেল। ওর চোখ দুটো পুনরায় কি যেন একটা খোজ করে ফিরলো।
মাকে ওখানে পাওয়া যাবে না বলে বোধহয় নিজেকে নিশ্চিত করলো মানিক। আশাহত মানিক ধীরে ধীরে নানিকে সাথে নিয়ে বাড়ীর দিকে পা বাড়ালো।
হাটতে হাটতে ও নানীকে জিজ্ঞেস করলো- আমার মা কষ্ট বেদনা সব কিছু কেমন নীরবে মেনে নিয়ে চলে গেল! কথাটা বলতেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো ওর বুক খালি করে।
-মানুষ মরে গেলেই কি সব শেষ হয়ে যায়?
মানিকের এ আচমকা প্রশ্নের ভার বোধহয় বৃদ্ধা সহ্য করতে পারলেন না। তিনি ডুকরে কেঁদে উঠে ওকে জড়িয়ে ধরলেন।
I had a long career in Army. I was trained to follow orders, instructions and set rules, taking those as axiomatic. That strayed me a bit from free thinking as happens with all technology users. Basically I am a free thinker always and now in search of some basic truth in my own way. ([email protected]).
I was very pleased to uncover this great site. I need to to thank you for ones time for this fantastic read!! I definitely appreciated every bit of it and I have you bookmarked to look at new information on your blog.
[url=https://buyviagra.cyou]sildenafil 50 mg cheap[/url]
[url=https://lyrica.press/]lyrica 75 mg without prescription[/url]
[url=https://lyrica.quest/]purchase lyrica online[/url]
[url=https://lyrica.top/]buy pregabalin pill[/url]
[url=https://lisinopril.press/]lisinopril 25mg tablets[/url]
[url=https://gabapentin.press/]order gabapentin online[/url]