অমৃতের সন্ধানে- ১১
ইনটার্নশীপ শেষ হওয়ার পর শিউলির হাতে তখন অফুরন্ত সময়। নিজেকে নিয়ে অনেক ভেবেছে ও। সবাই যখন ব্যস্ত শিউলির বিয়ের তোড়জোড়ে ও তখন ঘরের কোনে বসে হয়তো খবরের কাগজের পাতা উল্টিয়ে নয়তো টিভির রিমোটের সদ্ব্যবহার করে সময় পার করেছে। বিয়েটা যে কারো জীবনের জন্য অনেক বড় একটা ব্যপার কিন্তু ঘটনাটা ওর মধ্যে কোন চাঞ্চলের সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ঢাকার বাড়ীতে ওর বাবা ছাড়া আরো তিনটে মানুষ। রান্নাবান্না করার জন্য আধা বয়স পার হওয়া একজন মহিলা। গেটের দারোয়ান, বয়সে বৃদ্ধই বলা যায়, সে বাড়ীর লন সহ সবকিছু পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখে। আর তৃতীয়জন ড্রাইভার, বছর তিরিশেক বয়স।
বেলাল বাবাকে ফোনে জানিয়েছে‐ ও এক মাসের মধ্যেই আসবে। হাতে অনেক কাজ বড় জোর হয়তো দিন পনেরো থাকতে পারবে। তাই বাবা যেন আগে ভাগেই সব ঠিক ঠাক করে রাখেন বলে তাড়া দিয়েছে বেলাল।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উল্লেখ করে বেলাল বাবার কাছে যে কোন সময় গোলযোগ শুরূর আশঙ্কা প্রকাশ করে বিয়ের পর দু এক দিনের মধ্যেই ও শিউলিকে নিয়ে ফিরে আসার কথা জানিয়েছে।
বাবা সব কিছু ব্যবস্থা করতে তোড়জোড় শুরূ করেছেন। দিন ক্ষন ধার্য্য করে, কার্ড ছাপিয়ে সবাইকে দাওয়াত দেয়াও শুরূ করেছেন তিনি। বাড়ীতে নানা আত্মীয় স্বজনের যাতায়াত লেগেই আছে।
এরই মধ্যে গভীর রাতে একদিন বেলাল ফোন করলো। ফোনটা বাবার রূমে, তিনিই ধরলেন। বেশ কিছুক্ষন প্রয়োজনীয় কথা বলার পর বাবা শিউলির দরজা নক করলেন।
‐বেলাল কথা বলতে চায়।
শিউলি তখনো ঘুমায়নি। তাড়াতাড়ি উঠে দরজা খুললো। বাবাকে বেশ একটু চিন্তিত দেখাচ্ছে।
নির্লিপ্তে বাবার ঘরে ঢুকে ফোনটা উঠালো।
বেলাল বেশ সংক্ষেপে সোজা ভাবে যে কথাগুলো শিউলিকে বললো তাতে বাবার চিন্তিত হওয়ার কারণটা বুঝতে একটুও কষ্ট হলো না।
বেলালের হিসাবমতে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় যুদ্ধ যে কোন সময় বেধে যেতে পারে। তায় বিয়েটা লন্ডনে হলে ভালো হয়। তাহলে কোন দুশ্চিন্তা থাকে না।
তোড়জোড় করে বিয়ের আয়োজন পুরোমাত্রায় চলছে। একমাত্র মেয়ের বিয়ে। আপন বলতে যা বুঝাই তাদের সবার সাথই আলোচনা প্রায় হয়ে গেছে। এমনি একটা সময়ে বেলালের এই প্রস্তাব।
যাহোক, বাবা বেলালকে সরাসরি না বলেনি। বললে পাছে সে আবার কি ভেবে বসে, তাই অসহায় বাবা মেয়ের উপর সব ছেড়ে দিয়েছেন। মেয়ের সুখের জন্য সব কিছুই করতে পারেন তিনি।
বিয়ের ব্যপারটাই যেহেতু শিউলির মনের উপর কোন দাগ কাটতে পারিনি তাই ও বাবার দিকটা চিন্তা করেই বিনা দ্বিধায় বেলালকে ওর অসন্মতির কথা জানিয়ে দিল।
বেলালও খুব বাস্তবভিত্তিক ছেলে সে এমন কিছু কখনো করবে না যাতে সব কিছু আওতার বাইরে চলে যায়। ওর আশঙ্কা যদি সত্য হয় আর তখন একটা সমস্যা সৃষ্টি হবে মন্তব্য করে বেলাল পূর্বের প্লান মোতাবেকই সব কিছু হবে বলে জানিয়ে দিল শিউলিকে।
অনিশ্চয়তার সমাপ্তি হওয়াই বাবা স্বস্তি পেলেন বোঝা গেল। বেলাল খুব পরিপক্ক এবং বুদ্ধিমান ছেলে বলেও মন্তব্য করে শিউলি জীবনে সুখি হবে বলে তিনি স্বগতোক্তি করলেন।
তবে এমন একটা ব্যপারে শিউলির নির্লিপ্ততা বাবার চোখে একটু প্রকট হয়ে উঠলো বলে বোধ হলো।
তিনি শিউলিকে গভীর ভাবে অনুধাবন করার চেষ্টা করলেন।
অল্প কথাই বাবাকে বেলালের সাথে কথোপকথনের সারসংক্ষেপ জানিয়ে শিউলি স্বভাবজাত ভাবেই মাথা নিচু করে নিজ কক্ষের দিকে যাওয়ার সময় হটাৎ বাবার ডাকে একটু হতচকিত হয়ে দাড়ালো।
-মা তুমি কি আমাকে আর কিছু বলবে?
ওর বাবা বুকের সবটুকু ভালোবাসা নিঙড়িয়ে দিতে চায়লেন। কিন্তু অনভ্যস্ত কণ্ঠ যেন একটু বেসুরো শোনালো।
ঘটনার আকস্মিকতায় শিউলি কিছুটা আশ্চার্য্য হলো। কিন্তু খুব ভালো লাগলো বাবার আদরে ভরা কণ্ঠ শুনে।
কি জবাব দেবে ও বাবার জিজ্ঞাসার। শিউলি একদম হৃতবুদ্ধি হয়ে দাড়িয়ে রইলো।
শিউলির আসলেই কি কিছু বলার আছে ওর বাবাকে? নাই বা থাকবে কেন, ওকে ঘিরেই সব কিছু ঘটছে আর ওর কিছু বলার নেই? ব্যপারটা নিজের কাছেই কেমন অবিশ্বাস্য লাগলো শিউলির।
-সত্যি বলতে, বলার কত কিছুই আছে ওর। বুক ভর্তি অনেক কথা অনেক অনুভূতি, অনেক জিজ্ঞাসা। যা কিছু হচ্ছে তা সবটুই যে ওর জন্য ভালো না খারাপ তা সত্যিই ও জানে না।
বাবার প্রশ্নের জবাবে অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করছে, বলে বুকটা একদম খালি করে ফেলতে মন চাচ্ছে। কিন্তু বাবা যে সংক্ষিপ্ত জবাবটা আশা করছে সে রকম জবাবতো ওর কাছে নেই।
মেয়েকে একজন ভাল উপযুক্ত ছেলের সাথে বিয়ে দেয়াই ওর বৃদ্ধ পিতার একমাত্র লালিত একটা ইচ্ছা। বেলালের সাথে বিয়েটা ঠিক হওয়ার পর বাবার তৃপ্তিতে ভরা মুখটা ও দেখেছে।
এ ব্যপারে অনেক ভেবেছে শিউলি। বেলালকে অপছন্দ করার মত বিশ্বাসযোগ্য চাক্ষুস কারণ ও খুজে পায়নি। যেখানে ওর নিজের কোন উচ্ছাস নেই কোন ভাবাবেগের তাড়না নেই, সেখানে বাবার তৃপ্তিটায় ওর কাছে মূখ্য হয়ে দেখা দিয়েছে।
বাবার প্রশ্নের কোন জবাব ও খুজে পেল না। একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে মাথাট একটু উঁচু করে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে একটু হাসির চেষ্টা করতে করতে ও বললো- রাত অনেক হলো শুতে যাও বাবা, সকালেই আবার লোকজন আসবে আয়োজনের বিভিন্ন ফর্দ নিয়ে।
শিউলি ধীর পায়ে নিজের কক্ষে প্রবেশ করলো।
বিয়ে সবার জীবনে, বিশেষ করে একটা মেয়ের জীবনে অনন্যসাধারণ এক ঘটনা। কিন্তু ঘটনাটা কেন শিউলির ভিতর কোন ভাবাবেগের সৃষ্টি করতে পারছে না তা ওর নিজেরও বোধগম্য নয়। বিয়েটা অস্বাভাবিক কোন ঘটনা নয়, আর সত্যি বলতে গেলে ছেলে হিসাবে বেলাল যে কোন মেয়ের জন্যই মানানসই পাত্র।
বেলালকে ও কখনোই অবহেলা করেনি। ওকে কখনো একটুও ঠকায়নি শিউলি। ওদের কষ্টের দিনে বেলাল যে ওর এবং বাবার পাশে দাড়িয়েছে তা কৃতজ্ঞতার অটুট বন্ধনে ওদেরকে বেধেছে বেলালের সাথে।
বেলালকে নিয়ে অনেক ভেবেছে শিউলি। ওর চেহারা, জ্ঞানগরিমা, ব্যক্তিত্ব, মানবিকতা সব কিছুই বেলালের জন্য শিউলির মনে গভীর এক শ্রদ্ধাবোধের জন্ম দিয়েছে।
অবশেষে ওর এত ব্যস্ততার মাঝে বেলাল ওর কথা রেখেছে। শিউলির ইনটার্নশীপ শেষ হওয়ার পর দেশের অস্থির পরিস্থিতির কথা জেনেও যথাশীঘ্র সম্ভব বেলাল এসেছে। ওকে বিয়ে করে প্রকৃত মর্যাদা দিয়ে নিয়ে যেতে এসেছে।
-কর্তব্যবোধ! একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস টেনে কথাটা ভাবলো শিউলি। এই কর্তব্যবোধই এবং দেয়া কথা রাখার তাড়নায় কি বেলালকে এত দূর থেকে সব কাজ ফেলে এখানে আসতে বাধ্য করেছে।
হিসাবী বেলাল, যুদ্ধ শুরূর ব্যপারে ওর আশঙ্কাটা সত্য প্রমানিত হওয়াই এভাবে এখানে আটকে যাওয়ার পর কিছুটা বিরক্ত হলেও অধৌর্য্য হয়নি একটুও। কারণ ও বাস্তববাদী।
সব কিছুর পরিমাপে আর বিবেচনায় বেলাল শত ভাগ সঠিক। তাহলে কেন এমন মনে হচ্ছে, কেন মনে হচ্ছে ওর কোথাই যেন কি একটা নেই।
শিউলি গভীর ভাবে ভেবেছে বেলালের সব কার্যকলাপ, কথাবার্তা আচার ব্যবহার সবকিছু নিয়ে। সবকিছু ঘেটে ঘেটে কি নেই তা খুজে বের করার চেষ্টা করছে।
কিন্তু আজ আবারও নতুন করে বেলালের সবকিছুই কেমন যেন ভাবলেশবিহীন দায়িত্বপালন বলে মনে হতে লাগলো শিউলির কাছে। দায়িত্ব হস্তান্তর! এতদিন বাবা মায়ের দায়িত্ব থেকে পরিবর্তন হয়ে স্বামীর দায়িত্বে।
দায়িত্ব হস্তান্তর গ্রহনই যদি বিয়ের উদ্দেশ্য হয় তাহলেতো এখন শিউলি নিজের দায়িত্ব নিজেই নিতে পারে। কারো উপরতো ও নির্ভরশীল নয়। কি করে বাবাকে বলবে কথাটা। বাবা কি বুঝবে ও কি বলতে চায়।
এই পরস্থিতিতে ওর কি করা উচিত কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলো না শিউলি।
বেলাল হিসাবী ছেলে। আর ওর হিসাবপ্রসুত আশঙ্কাটাই বাস্তবে রূপ নিল। ও আসার প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধ লেগে গেল।
শুরূ হলো স্বাধীনতা যুদ্ধ। সব কিছুতেই একটা ছেদ পড়লো।
I had a long career in Army. I was trained to follow orders, instructions and set rules, taking those as axiomatic. That strayed me a bit from free thinking as happens with all technology users. Basically I am a free thinker always and now in search of some basic truth in my own way. ([email protected]).
I was very pleased to uncover this great site. I need to to thank you for ones time for this fantastic read!! I definitely appreciated every bit of it and I have you bookmarked to look at new information on your blog.
[url=https://buyviagra.cyou]generic sildenafil 50 mg[/url]
[url=https://lyrica.press/]buy pregabalin 75 mg for sale[/url]
[url=https://lyrica.quest/]lyrica canada[/url]
[url=https://lyrica.top/]purchase lyrica online cheap[/url]
[url=https://lisinopril.press/]zestril 40[/url]
[url=https://gabapentin.press/]order neurontin 400 mg without prescription[/url]