অসহায় মানুষ -১৯
সত্যটা আল্লারাখাকে বলবে বলে ঠিক মনঃস্থির করল কাজল।
-আমি বুঝি আপনি আসলেই ভাইজানকে ভালবাসেন। কিন্তু আমার গা ছুয়ে আল্লার কসম কাটতে হবে যে এ কথা আপনি কাউরে বলবেন না। কথাটা আজ পর্যন্ত আমার স্ত্রীকে পর্যন্ত বলিনি।
আল্লারাখা একটু অবাক হলেও অভয় দিল ওকে।
-রাজধানী বস্তিটা এখন যেখানে দেখতাছেন সেখান থেকে আরো পশ্চিমে খালের ওপাড়ে ছিল যেখানে এখন সারি সারি দালান দেখা যায়। সরকার অনেকদিন ধরেই বলছিল সবাইরে চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু কে যায় আর যাইবোই বা কোনখানে?
বেয়ারা এক কাপ চা আর বিস্কুট দিয়ে গেল।
-কই তোমার জন্য দিল না।
-আপনি খান স্যার আমি এই মাত্রই খায়ছি এক কাপ।
আল্লারাখা পিরিচ থেকে একটা বিস্কুট তুলে নিল।
-বর্ষা কাল তখন আর বাদলাও পড়েছিল আকাশ ফুটো করে। ভোর হওনের আগেই পুলিশ আসলো। মাইকে ঘর ছেড়ে দিতে কইতে লাগলো। কিন্তু কেউ না নড়াই শুরূ হলো পুলিশের টানা হেচড়া আর লাঠি পেটা।
-কান্নার রোল পইড়া গেল। পুলিশ মাইরা টাইনা একটা ঘর খালি করে লগে লগে বুলডোজার তা গুড়ায়ে দেয়। ওরই মধ্যে বস্তি বাসী লোকজন তাদের জিনিসপত্র সরাতে লাগলো। সে কি দৃশ্য, দেহনের মত না।
আল্লারাখা শুনছিল তন্ময় হয়ে। চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে খেয়ালই নেই সেদিকে। এখন মনে পড়ছে যে ও দেখেছিল সে তান্ডবের পরের দৃশ্য।
-স্যার চা যে ঠান্ডা হয়ে গেল।
ওর ডাকে যেন চমকে উঠলো আল্লারাখা।
বেয়ারাকে ডেকে চা গরম করে আনতে বললো কাজল।
-স্যার বস্তির কথা ভাবতাছেনতো। কত অন্যায় হয় ওদের উপর।
একটা অজানা আশঙ্কায় বুকটা ধড়ফড় করছে আল্লারাখার।
-এ কাহিনী কাজল ওকে শোনাচ্ছে কেন? ভাবলো আল্লারাখা।
বেয়ারা চা গরম করে দিয়ে গেল।
-তখন আমাদের বেগম সাহেবার অবস্থা খুব খারাপ। সন্তান হয় না হয় না করে করে আল্লায় যদিও সন্তান দিল কিন্তু তিনি একটা মরা সন্তান প্রসব করলেন। জ্ঞান ফিরছিল না বেগম সাহেবার। আর মাঝে মধ্যে একটু হুস হলেও তিনি ভুল বকতে বকতে আবার জ্ঞান হারায় ফেলছিলেন। জ্ঞান হলেই কেবল ছেলেকে দেখতে চাচ্ছিলেন।
সাহেবও দিকবিদিক জ্ঞান শুণ্য। সব বড় বড় ডাক্তারে ভইরা গেল বাড়ী। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিলো না। আশাতো একরকম ছাইড়েই দিছিলো।
নির্লিপ্তে ওর কথা শুনছিল আল্লারাখা।
-আমি বিয়ে করিনি তখন। বৃদ্ধ খালাকে নিয়া নেওয়াজ বাড়ীর কোয়র্টারে থাকি। সব ডক্তার যখন আশা ছাইড়া দিছে তখন খালা রাজধানি বস্তির এক কবিরাজের ঠিকানা দিয়ে তাকে নিয়ে আসা বা তার কাছ থাইকা কবিরাজি ঔষধ আননের জন্য রাত থাকতেই পাঠালো আমাকে।
-সাহেবের গাড়ীটা নিয়ে যখন পৌছালাম বস্তির কাছাকাছি তখন কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলির আওয়াজ শুনলাম। রাস্তার পাশে লোকজনের ভীড় ওদের কাছ থেকেই জানলাম বস্তি উচ্ছেদ করতাছে পুলিশ।
-হায় হায় কি হবে অহন। ভাবলাম মনে মনে। বৃষ্টি পড়ছিলো ফোটা ফোটা। গাড়ীটা রাস্তার পাশে একটা দোকানের কাছে পার্ক করে ছাতা মাথায় হাটতে হাটতে গেলাম ওখানে।
তান্ডব দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না। সব লন্ড ভন্ড! কিছু পুলিশ পাহারা দিচ্ছে আর কয়েকজন বস্তিবাসী ভাঙ্গা চালার নিচ থেকে টানাটানি কইরা জিনিস পত্র বের করতাছে।
-বিশ্বাস করেন স্যার সে দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। প্যাঁচ প্যেচে কাদার মধ্যে ডিঙ্গি দিয়া দিয়া আমিও গেলাম ভাঙা বস্তির মধ্যে।
-বাবা আমার ছেলেটাকে একটু বাচান।
-হটাৎ কইরা এক মহিলার কান্নার স্বর কানে আসলো। কিছুই বুঝলাম না। আবারও সে ডাক। দেখলাম আমার থেইকা একটু দূরে ভাঙে পড়া একটা চালের নিচ থেকে শব্দটা ভাইস্যা আইতেছে।
-তাড়াতাড়ি চালটা উচু করলাম এক কোণা ধইরা। দেখলাম এক মহিলা উপুড় হইয়া আছে। ওরই বুকের নিচে কচি একটা বাচ্চা। এতক্ষন নিজের শরীল দিয়ে চালের ভারটা আগলাই রাখছিল।
-আমার মাথায় কাজ করছিল না। তাড়াতাড়ি টানাটানি কইরা চালডা সরালাম। বুঝলাম বাচ্চাডা বাইচা আছে।
-আমার ছেলেটাকে বাচান! মহিলার করুন কণ্ঠ।
-মানুষের কি অসহায় অবস্থা! চোখে পানি আইস্যা গেল।
মহিলার বুক থেইকা বাচ্চাটাকে কোলে তুইলা নিতেই মহিলাডা উঠে দাড়ালো। ওর মাথা ফাইটা রক্ত ঝরতাছিল।
-বাচ্চাডারে আমার গায়ের চাদরে জড়াইয়া হেরে ডাক দিয়া গাড়ীতে উঠালাম। হেদেরকে স্যারের পরিচিত একটা ডাক্তার খানায় নিয়া গেলাম পত্তম। ডাক্তার ওর মাথায় ব্যন্ডেজ কইরা দিল। মহিলাডা খুবই দুর্বল ছিল। বাচ্চার জন্য দুধ আর হের খাওনের বন্দোবস্ত করলাম।
-ডাক্তার বললো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হেদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে। অত সকাল তার উপর গুড় গুড়ুম মেঘের ডাক আর দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি। উপায়ন্তর না দেইখা হেদের আমার বাড়ীত নিয়ে আসলাম। গাড়ীডা থামালাম আমার ঘরের সামনে।
নিশ্চুপ হয়ে সব শুনছিলো আল্লারাখা।
-খালা অধীর হয়ে অপেক্ষা করতাছিল আমার লাইগা। গাড়ীর শব্দে বেইরে আসলো খালা।
-কইরে কবিরাজ আনলি না ঔষধ?
-অঝরে বৃষ্টি ঝরতাছে। দিনটা কোথায় গড়ালো তা বোঝার উপায় নেই।
-পিছনের ছিটে বাচ্চা কোলে পাথরের মত বসা মহিলা। ওকে দেইখা চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল খালার।
-খালা, তাড়াতাড়ি বাচ্চাডা ভেতরে নিয়া গরম কাপড়ে ঢাক। আর মহিলার ভেজা কাপড় পাল্টাইয়া হের শোয়ার ব্যবস্থা কর সব বলতাছি পরে।
আমার তাড়াহুড়া দেইখা খালা কোন কিছু আর জিজ্ঞেস করলো না।
গাড়ী গ্যারেজে রাইখা ফিরতি ফিরতি দেখি খালা সব সামলায় নিয়ছে।
-দুদিন আগে বাচ্চাডা হয়ছে। বস্তির যে ঘরডায় মহিলা ছিল তারা নাকি ওর আপন কেউ না। থাকতে জায়গা দিছিলো শুধু। বস্তি উচ্ছেদের সময় হেরে ফেইলা ওরা চইলা যায়। হের তো যাওনের জায়গা আছিল না, বাইরে ঝড় বাদল তায় ওই অবস্থায় ঘরের মধ্যে বাচ্চাডারে নিয়া বইসা থাকা ছাড়া কোন উপায় আছিল না।
-ঘটনা টুকু বইলা পর পর কয়েকবার বমি করলো মহিলা। মাথায় প্রচন্ড ব্যথার কথা বললো। মুখে কোন সাড়া শব্দ নেই দুচোখ বয়ে কেবল পানি গড়াইয়া পড়তাছিল।
-তোমার স্বামী কই?
-খালার প্রশ্নের জবাবে ডুকরাইয়া কান্দে উঠে বললো স্বামী হেরে তাড়াইয়া দিয়ছে। সে ছাড়া ছেলেডার দুনিয়াতে কেউ নাই।
খালার দুহাত জড়াইয়া ধইরা কানতে কানতে বললো -আমি বোধহয় বাচবো না। আপনি আমার মায়ের মত, একটা কথা রাখবেন আমার।
-কি বলো?
-ছেলেটা যদি বেচে থাকে তবে ওর পরিচয়ের জন্য আমার সাথে ওর একটা ফটো তুলে রাখার ব্যবস্থা করবেন?
মৃত্যু পথের যাত্রী মায়ের শেষ ইচ্ছেডা না রাখার মত সাহস বোধহয় খালার ছিল না। তিনি দৌড়ে সাহেবের বাড়ী থাইকা একটা ক্যামেরা আনলেন।
ছেলেকে কোলে নিয়ে দাড়ানোর শক্তি ছিল না মহিলার। আমি ছেলেডারে ওনার কোলে দিয়া এক হাতে তা সামাল দিলাম আর অন্য হাত দিয়া মহিলাকে ধইরা দাড়াতেই খালা একটা ছবি তুললো।
-ছবিটা তুইলা শেষ স্মৃতি রাখার জন্যিই বোধহয় কোনরকমে নিজেরে ধইরা রাকছিল বেচারী। ছবি তোলার পর পরই ও খাটে শুইয়া পড়লো আর তারপরই ওর দেহটা নিস্তেজ হইয়া গেল।
-কি মনে কইরা খালা বাড়ীর মধ্যে ছুট্টা যাইয়া ব্যপারডা বলেছিল সাহেবকে।
-তারপর ছেলেডাকে মৃত্যুপথযাত্রী বেগম সাহেবার কোলে দেয়া হলো। মনে হইলো যেন যাদুর মত কাজ করলো। হতভাগা ছেলেডা এক মাকে মারে অন্য মারে যমদুতের হাত থেকে বাচালো।
-ঝড় বাদলের মধ্যেই তাড়াতাড়ি মহিলার কবরের ব্যবস্থা করলেন সাহেব।
একটু থেমে কি একটা ভাবল কাজল।
-আমার মনে হয় তায়তো প্রদিপ ভাইজানের বস্তির দিকে এত টান।
নেওয়াজ বাড়ীতে পৌঁছে সেদিন আল্লারাখার অনুরোধে ওরা প্রথমে কাজলের ঘরে গেল আর কাজল ছবিটা ওকে দেখিয়েছিল।
যদিও শুখিয়ে দোলনের শরীরটা প্রায় হাড্ডিসার। মাথায় সাদা ব্যন্ডেজ বাধা তবু নিজের স্ত্রীকে দেখে চিনতে একদম কষ্ট হয়নি আল্লারাখার।
দুচোখ বয়ে কেবল অশ্রু গড়িয়ে পড়েছিল আল্লারাখার। কিছুই বলেনি কাজলকে। ওকে নিয়ে মাটির সাথে সমান হয়ে যাওয়া দোলনের কবরের কাছে অনেকক্ষন দাড়িয়েছিল। আকাশের দিকে তাকিয়ে নীরবে অশ্রু সংবরন করলো আল্লারাখা।
কাজলের ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা দেখে আল্লারাখা বলেছিল -কাজল এখানে যে এক ফেরেস্থা শুয়ে আছে তার জন্য চোখের পানি না ফেলে পারা যায়।
কাজল অবাক হলেও অন্য কোন প্রশ্ন করে বিব্রত করেনি আবেগ আপ্লুত আল্লারাখাকে।
প্রদিপের মায়ের ছবিটা দেখে আল্লারাখার ভিতর পরিবর্তনটা কাজলের চোখ এড়াতে পারিনি। কিন্তু তার কোন কুল কিনারা করতে না পারায় বিষয়টা কাউকে বলেনি কাজল।
সেদিন কাজল সব খুলে বললো তার মনিবকে। প্রদিপের ব্যপারে আল্লারাখার বিশেষ আগ্রহ, ওকে প্রদিপ সম্পর্কে সব কিছু জানানো এবং ওর ঘরে রাখা প্রদিপের ছোট বেলার ছবি দেখে ওর ব্যথীত হওয়ার কথা, প্রদিপের জন্মদাতা মায়ের কবরে দাড়িয়ে আল্লারাখার নীরবে অশ্রু সংবরণের কথা সবিস্তারে বর্ণনা করলো।
আল্লারাখাকে অত সবকিছু বলার জন্য মনিবের কাছে নিজের অনুতাপ প্রকাশ করলো কাজল।
-আল্লারাখা প্রদিপ ভাইয়াকে সত্যিই ভালবাসে। ভাইয়ার কোন অকল্যান উনার দ্বারা সম্ভব না। এ ব্যপারে আপনাকে নিশ্চিত করে বলতে পারি স্যার।
হাত দুটো জোড় করে মুখ ঢেকে কাদতে লাগলো কাজল।
-আমার মনে হয় আল্লারাখা স্যার বাগান দেখতে যায় না। যায় প্রদিপ ভাইয়ার মায়ের কবরে।
নাসিম নেওয়াজ আর রেবেকা বেগম অবাক হয়ে তাকিয়ে কাজলের দিকে।
-এ নিয়ে অনেক ভাবছি নিজের মনে মনে। কিন্তু কোন কুলকিনারা করতে পারিনি।
ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে লাগলো কাজল।
– আল্লারাখা স্যারকে আমি খুব সন্মান করি। ফেরেস্তার মতন তিনি। আমার সাথে অনেক কথা বলে। কথা বলতি বলতি তার দুচোখ বয়ে কেবল পানি গড়ায়ে পড়ে। আমাকে বলে তিনি মন হালকা করেন।
চোখ মুছে নিল কাজল।
-একদিন বাগানে হাটার সময় তিনি বললেন – আমি খুব দুঃখীরে কাজল। আপন বলে কেউ নেই আমার। আমি এক বড় অপরাধী, কেউ আমাকে শাস্তি না দিলেও আমার শাস্তি আমিই নিজেই দেব।
-খুব কাদছিলেন তিনি। কি বলবো কেবল বোবার মত খাড়ায়ে দেখছিলাম।
-কাদতে কাদতে তিনি বললেন – অন্তরা আমার কেউ না হয়েও বাবার মত আমাকে ভক্তি করে। ভাল মন্দ সব কিছুই আমার সাথে ভাগাভাগি করে। আমার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে।
-বড় দুখী মেয়েটা। অনেকটা আমারই মত তায় কিছুতেই ওকে ঠকাবো না আমি। তাতে আমার যত কষ্ট হয় হোক। এমনিতেই বড় অপরাধী আমি আর একটা অপরাধ আমি করতে পারবো না।
-যাওয়ার সময় চোখ মুছতি মুছতি তিনি বললেন – এখানে আর আমার আসা হবেনা। মেয়েটা কিছুদিন ধরেই বাড়ী ফিরে যাওয়ার জন্য খুব তাড়া দিচ্ছে। আজ যায় কাল যায় করে আমিই আটকে রেখেছিলাম। এ বাড়ীটা ভাড়া হয়ে গেছে। ভাড়াটিয়া কবে উঠবে তা জানতে চেয়েছে কয়েকবার।
-অন্তরার বাবাও ফিরবে কিছুদিনের মধ্যেই। বিরাট জমিদার বাড়ী ওদের। বাড়ীটা পড়েই আছে। ওখানে হাসপাতাল খুলবে অন্তরা। কাগজ পত্র সব ঠিকঠাক করেছে ও আর ওর বাবা মিলে। হাসপাতালের যাবতীয় সরঞ্জামাদি সিংগাপুর থেকে কিনে জাহাজে পাঠিয়ে দিয়েছে ওর বাবা। বাড়ীতে মিস্ত্রি কাজ করছে মাস ছয়েক ধরে। ওর বাবা একজন ইঞ্জিনিয়ার রেখে সব তদারকির ব্যবস্থা করেছে। নিজে এসে সব দেখেও গিয়েছে এর মধ্যে কয়েকবার। কত দুখী মানুষের মুখে হাসি ফুটবে ওখানে। ওসব দেখে দেখেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেব।
I had a long career in Army. I was trained to follow orders, instructions and set rules, taking those as axiomatic. That strayed me a bit from free thinking as happens with all technology users. Basically I am a free thinker always and now in search of some basic truth in my own way. ([email protected]).
hydroxychloroquine online order – sildenafil 150 mg cheap cenforce 50mg
buy gabapentin 600mg online cheap – doxycycline cost ivermectin for sale
brand deltasone 40mg – brand isotretinoin 40mg buy prednisolone 10mg sale
men’s ed pills – sildenafil pour homme viagra generika rezeptfrei kaufen
buy generic fildena 50mg – order viagra 150mg online cheap viagra 150mg over the counter
metronidazole 200mg pill – order metronidazole generic cephalexin online
buy generic finasteride 1mg – generic propecia 1mg ciprofloxacin 1000mg canada
buy ondansetron without prescription – oral zocor 10mg valtrex 1000mg usa
brand cialis 10mg – buy tadalafil generic flomax 0.4mg pills
buy levofloxacin 500mg sale – buy levaquin 250mg without prescription tadalafil 5mg for sale
I haven?¦t checked in here for a while since I thought it was getting boring, but the last several posts are great quality so I guess I?¦ll add you back to my everyday bloglist. You deserve it my friend 🙂
losartan 25mg canada – brand phenergan phenergan us
clopidogrel 75mg price – order generic warfarin 5mg cost reglan
cyclobenzaprine drug – inderal 10mg over the counter purchase inderal sale
accutane 10mg canada – amoxicillin 500mg generic order generic tetracycline 250mg
order modafinil 100mg for sale – budesonide allergy spray order rhinocort online
purchase sildenafil without prescription – cialis online buy buy tadalafil 10mg generic
order cenforce pills – order rosuvastatin generic buy motilium pill
lasix 100mg ca – furosemide price brand doxycycline 100mg
diltiazem sale – prednisolone pills gabapentin 600mg generic
buy tadalafil 5mg online – buy cialis 10mg sale buy generic viagra 100mg
levothyroxine tablets – order triamcinolone 4mg for sale buy plaquenil 400mg pills