অসহায় মানুস- ৩
দান করতে প্রকৃতি এত সিদ্ধহস্ত! আপাতঃদৃষ্টিতে একজন মানুষকে যতই নগন্য দেখাক না কেন, প্রতিটি মানুষই কোন না কোন ভাবে ভরপুর প্রাকৃতিক দানে। সৃষ্টার সৃষ্টি প্রতিটি মানুষই সম্ভাবনার আধার। স্বপ্নে ভরপুর সব জীবন।
অবাক হয় প্রদিপ। সহস্র মানুষের মুখ দেখে এ এক অনন্য আবিস্কার প্রদিপের।
বস্তিবাসী এক এক জনের দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবে প্রদিপ। এ ভাবে মানুষকে এত কাছ থেকে ইতিপূর্বে কখনো দেখেনি ও। আর বস্তিবাসী সহজ সরল মানুষদের মধ্যে কৃত্তিমতার আবরণটা খুবই পাতলা। তায়তো ওদের স্বরূপটা সহজেই দেখা যায়।
বৈচিত্রে ভরা এসব মানুষদের নিয়ে কাজ শুরূ করলে কখন যে সময় কেটে যায় খেয়ালই থাকে না প্রদিপের।
এই মানুষগুলো সবাই জন্মগতভাবে প্রাপ্ত সম্বল কাজে লাগিয়েই বেচে থাকার জন্য যুদ্ধ করছে প্রতিনিয়ত। পরিবার, রাষ্ট্র, সমাজ বলতে গেলে এদেরকে কিছুই দেয়নি। প্রতিটি দিন এদের জন্য এক একটা নতুন যুদ্ধ এবং প্রতিটি কাজ এক একটা যেন যুদ্ধ ক্ষেত্র। ওদের এত যুদ্ধের লক্ষবস্তু একটায় -বেচে থাকা।
এরা প্রকৃতির সন্তান আর নিরেট প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ কাজে লাগিয়েই জীবন নির্বাহ করে।
– এরা সবাই নিজের ভিতর লুকায়িত প্রাকৃতিক গুনকেই কাজে লাগিয়েছে জীবিকার তাকিদে, তাহলে এদের কেউ মাথা তুলে দাড়াতে পারছে না কেন?
প্রদিপের এমন প্রশ্নের জবাবে মিশেল বলেছিল –তুমি কি ভাবে বলছো যে এদের কেউই মাথা তুলে দাড়াতে পারিনি? আমাদের এন জি ও’র মাধ্যমেই আর্থিক ও শিক্ষা সহায়তাই অনেকেই এখন অনেক ভাল কাজ করছে, এই দেশে এবং বিদেশে। এছাড়া তুমি দেখনা পৃথিবীতে হাজারো উদাহরণ আছে যেখানে রাষ্ট্রনায়ক, বিজ্ঞানী, সমাজ সেবক সবায় ওই আস্তাকুড় থেকে উঠে এসেছে।
-আমাদের শিক্ষিত সমাজের বাবা মা তাদের সন্তানদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন সফল মানুষদের মত হতে অনুপ্রানিত করে। আর ভুলটা সেখান থেকেই শুরু হয়। গতানুগতিক ধারার সাথে তাল মিলিয়ে জীবন গড়তে চায়। অর্থাৎ সবাই বিস্কুট রেসে লেগে যায়। বিস্কুটের সংখ্যা কম প্রতিযোগী বেশী; কাছের বন্ধুটিই সব থেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী, তার হার মানে আমার জিত। নেতিবাচকতা দিয়ে জীবন শুরু হয়।
-বিধাতার সৃষ্টিতে দুটো কোন কিছুই অবিকল একই রকম হয় না। ভিন্নতায় ভরা তাঁর সৃষ্টি। যারা তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ পায় তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ পুরোপুরি নিজের মত নয় অন্যের মত হতে চায়। আর সুবিধা বঞ্চিত বস্তির ছেলেমেয়েদের সে সুযোগই নেই। ওরা জীবিকার তাড়নাই শুধু শরীর নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
-দেখ প্রদিপ যারা লেখাপড়া শিখে গতানুগতিক চাকরী করে তারা প্রকৃত পক্ষে অন্যের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে কিছু মাসহারার বিনিময়ে। আর মনিবেরা তাদের মাসহারা এমনই ভাবে নির্ধারণ করে যে মাসের শেষ না হতে হতেই তা ফুরিয়ে যায় এবং তারা আবার মনিবের দাক্ষিণ্যের প্রতি চেয়ে থাকে। হ্যাঁ তবে ভাল মনিব বা খারাপ মনিব আছে। সেটাও ভাগ্যের উপর নির্ভর করে।
প্রদিপকে বিষয়টি ভাল ভাবে বোঝানোর জন্য সেদিন মিশেল ওকে একটা রুপক গল্প বলেছিল-
-এক পাহাড়ী অনাবাদী মন্দায় ডুবে থাকা এলাকাতে বসবাসকারী এক দরিদ্র লোকের সরায় খানাতে এক ভিনদেশী ধনাড্য ব্যবসায়ী আসলো। উদ্দেশ্য দিন দশেক অবস্থান করে সেখানে ব্যবসার ক্ষেত্র অনুসন্ধান করা।
-পুরো এলাকাতেই মন্দা চলছে, সবাই ঋণের ভারে জর্জরিত অন্যান্য সব কিছুর মত সরায় খানার ব্যবসাও ঠিক চলছিলো না। অর্থাভাবে সরায় খানার সুবিধাদিও খুবই নিম্ন মানের ছিল। অবস্থা বুঝে ধনাড্য ব্যবসায়ী তাকে একটা প্রস্তাব করলো –তোমার সরায় খানার যা অবস্থা তা আমার মত একজন ব্যবসায়ীর থাকার মত উপযুক্ত নয় তা তুমি নিজেও বুঝতে পার। সরায় খানাতে অতিথি আসে না বলেই চলে। তাছাড়া, তুমি বিভিন্ন ভাবে ঋণে জর্জরিত। কিন্তু তোমাকে আমি সাহায্য করতে চায়।
-আমি কষ্ট করে হলেও তোমার এই জীর্ণ সরায় খানাতে দশ দিন থাকবো। বলতে পার সারা দিন বাইরে বাইরেই থাকবো আমার কাজে শুধু রাতে তোমার সরায়খানাতে একটু চোখ বন্দ করা আর কি। তোমাকে আমি বিশ হাজার টাকা দেব, ধার হিসেবে, দশ দিনের দিন আমি যখন তোমার সরায় খানা ত্যাগ করবো তখন তুমি আমার বিশ হাজার ফেরত দেবে, এই টাকার জন্য কোন সুদ দেয়া লাগবে না। অর্থাৎ বিনা সুদে তুমি দশ দিনের জন্য বিশ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা করতে পারবে।
সরায় খানার মালিক ঋণে জর্জরিত, ব্যবসা ভীষণ মন্দার ভিতর দিয়ে যাচ্ছিল এবং মোটামুটি ভাবে সব কিছু বাকিতে ক্রয় বিক্রয় করার ফলে পাওনাদারদের তাগাদায় বিড়ম্বনার মধ্যে দিনাতিপাত করছিলো, সে স্বানন্দে প্রস্তাবটি গ্রহন করল।
ধনাড্য ব্যবসায়ী হাজার টাকার বিশটা নোট তার টেবিলের উপর রেখে দিল। তারপর জিনিস পত্র নিজ কক্ষে রেখে ব্যবসা সম্প্রসারনের খোঁজে বেরিয়ে পড়লো।
টাকা গুলো পেয়ে সরায় খানার মালিক তার পাওনাদারদের বিড়ম্বনার ইতি টানার জন্য কোন সময় নষ্ট না করে বাকিতে মাংস কেনা কসায় যে তাকে পাওয়ানা টাকার জন্য প্রতিদিন অকথা কুকথা বলতো তার পুরো পাওনা মিটিয়ে দিল। একই ভাবে ওই কসায় যে ফার্ম থেকে বাকিতে পশু কিনত তাকে তার পাওনা মিটিয়ে দিল। পশু ফার্মের মালিক তার কিছু ব্যবসায়ী অতিথিদের সরায় খানায় রেখে টাকা পরিশোধ করেনি তিনি দশ দিনের দিন সকালে বিশ হাজার টাকা সরায় খানার মালিককে দিয়ে তার ঋণ মেটাল।
ঐ দিন দুপুর বারোটার দিকে ধনাড্য ব্যবসায়ী তার জিনিস পত্র সহ নেমে কাউন্টারে আসলো এবং সরায় খানার মালিকের কাছ থেকে তার গচ্ছিত বিশ হাজার টাকা ফেরত নিয়ে মৃদু হেসে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রস্থান করল।
কি ঘটলো ভেবে দেখেছ প্রদিপ? মন্দা পীড়িত অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা তাদের সবার ঋণ শোধ করলো এবং সব শেষে ধনাড্য ব্যবসায়ী তার পুরো টাকা নিয়ে ফিরে গেল। প্রকৃত অর্থে ধনাড্য ব্যবসায়ী তার ব্যবসা সম্প্রসারনের অনুসন্ধান বিনা খরচে সম্পন্ন করে গেল। বাকি সবার ব্যবসা হল কিন্তু টাকাটা কেউ ধরে রাখতে পারলো না। তারা আবার অন্য কোন ধনাড্য ব্যক্তির আগমের অপেক্ষায় থাকলো।
নিমগ্ন হয়ে মিশেলের গল্পটা শুনছিল প্রদিপ। গল্পটা শেষ করে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ল মিশেল।
-বস্তির মানুষের অবস্থা ওই একই রকম। অনেকটা স্বগত স্বরে কথাটা বলল মিসেল।
বস্তির মানুষ একটু আধটু পাপ যা করে তা কেবল শরীরে বেচে থাকার প্রয়াসে। যারা চালাক ওরা হয়তো কালকের কথাটা চিন্তা করে একটু বেশী হাতিয়ে নিতে চায়। এই যা পার্থক্য। রাতে চোখ দুটো বন্দ করতে পারলেই একটা দিন শেষ হয় ওদের, আবার সূর্য্য উঠলেই নতুন আরেকটা দিন শুরূ হয়। ভাবছিল প্রদিপ।
এখানে কাজ করতে এসে জীবনের একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো প্রদিপের চিন্তা চেতনায়। নিজের জীবনের সাথে তুলনা করলে মনে হয় পাশাপাশি বাস করলেও ওরা সব যেন ভিন্ন গ্রহের বাসিন্দা।
প্রায় লাখ খানেক মানুষের বাস এ বস্তিতে। তিন ভাগের এক ভাগ শিশু, আর একভাগের বয়স বারো থেকে বিশের মধ্যে। বাকিরা তার উপর এবং বৃদ্ধ।
প্রথম গ্রুপ অর্থাৎ ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ওর মেধা চিহ্নিত করার প্রধান টার্গেট গ্রুপ। মাঝের গ্রুপটা্র জন্য ওর চিন্তা, বেশ দেরী হয়ে গিয়েছে ওদের জন্য, স্বার্থান্বেষী সমাজের দৃষ্টি ওদের উপরই নিবদ্ধ। এই বয়েসের ছেলেমেয়েরা যারা ইতিমধ্যেই অনাদরে অনাহারে বেড়ে উঠে পৃথিবীটাকে নীতি নৈতিকতাহীন এক যুদ্ধ ক্ষেত্র হিসাবে বিশ্বাস করে নিয়েছে। এদেরকে স্বার্থান্বেষী সমাজ তাদের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেয়ার এক নগ্ন খেলায় মত্ত। এরা তাদের জন্য খুব সস্তা পণ্য। আর বস্তিগুলো সরবরাহের স্বর্গরাজ্য।
বেচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়ে এদেরকে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন অনৈতিক আর সন্ত্রাসী কাজে। তারপর কোনরকমে এদেরকে একবার বিপদে ফেলতে পারলে অতি কৌশলে ফিরে আসার সবগুলি রাস্তা বন্দ করে দেয়া হয়।
আর তৃতীয় গ্রুপটির বড় সংখ্যক মানুষ এমন এমন সব কাজে লিপ্ত হয়েছে যে তারা দাগী আসামী হয়ে জীবনের অন্ধ পচা গলিতে ঢুকে অন্ধকারেই জীবন কাটাচ্ছে। পুলিশের খাতায় এরা সব পলাতক আসামী। স্বার্থান্বেষী মহলের কর্তা বাক্তিদের পদলেহন করেই ওদেরকে বাচতে হয়।
বস্তি বাসীদের ওই অজানা জীবনের সন্ধান একদম হতভম্ব করে ফেললো প্রদিপকে।
এদেরকে বাচাতে হবে। ভাবল প্রদিপ। তার জন্য একমাত্র উপায় ওদেরকে সচেতন করা, স্বাবলম্বী করা।
এত মানুষের মধ্যে কেবল গুটিকতককে বিদেশে পাঠালে বা দুএকজনকে ছোট খাট চাকরী দিলে সামগ্রীক সমস্যা সমাধানে তা যৎসামান্যই অবদান রাখবে।
অন্য দিকে ওই যৎসামান্য ব্যবস্থা ওদের মনে দারীদ্রের এই অরণ্য থেকে পালানোর অমূলক একটা স্বপ্নের জন্ম দিয়ে ওদেরকে দিকভ্রান্ত করে ফেলে। পালানোর সুখস্বপ্নটা অশিক্ষিত অচেতন এই মানুষগুলোকে তাদের যৎসামান্য যতটুকু আছে সেটুকুকেও অতি তুচ্ছ বলে গণ্য করতে শিখায়।
প্রদিপের মতে -এ ধরণের ব্যবস্থা বরং এখানকার সব কিছুর সাথে মানানসই হয়ে গড়ে ওঠা ব্যবস্থাকে ওলট পালট করে দেয়।
I had a long career in Army. I was trained to follow orders, instructions and set rules, taking those as axiomatic. That strayed me a bit from free thinking as happens with all technology users. Basically I am a free thinker always and now in search of some basic truth in my own way. ([email protected]).
Such an amazing blog! Very informative!
I saw a similar post on another website but the points were not as well articulated.
I love your blog. It looks every informative.
Pretty nice post. I just stumbled upon your weblog and wanted to say that I’ve really enjoyed surfing around your blog posts. After all I’ll be subscribing in your feed and I am hoping you write again very soon!
I think I will become a great follower.Just want to say your post is striking. The clarity in your post is simply striking and i can take for granted you are an expert on this subject.
We can see that we need to develop policies to deal with this trend.
Nice Post. It’s really a very good article. I noticed all your important points. Thanks.
I have to say this post was certainly informative and contains useful content for enthusiastic visitors. I will definitely bookmark this website for future reference and further viewing. cheers a bunch for sharing this with us!
Nevertheless, it’s all carried out with tongues rooted solidly in cheeks, and everybody has got nothing but absolutely love for their friendly neighborhood scapegoat. In reality, he is not merely a pushover. He is simply that extraordinary breed of person solid enough to take all that good natured ribbing for what it really is.
Thanks for your patience and sorry for the inconvenience!
What i discover troublesome is to find a weblog that may capture me for a minute however your blog is different. Bravo.
It’s clear you’re passionate about the issues.
Took me time to read all the comments, but I really enjoyed the article. It proved to be Very helpful to me and I am sure to all the commenters here It’s always nice when you can not only be informed, but also entertained I’m sure you had fun writing this article.
Wow! Thank you! I always wanted to write on my website something like that. Can I include a part of your post to my website?
Beneficial Blog! I had been simply just debating that there are plenty of screwy results at this issue you now purely replaced my personal belief. Thank you an excellent write-up.
I know this is not exactly on topic, but i have a blog using the blogengine platform as well and i’m having issues with my comments displaying. is there a setting i am forgetting? maybe you could help me out? thank you.
Nice blog here! Also your web site loads up very fast! What host are you using? Can I get your affiliate link to your host? I wish my web site loaded up as fast as yours lol
This is really interesting, You’re a very skilled blogger. I have joined your feed and look forward to seeking more of your great post. Also, I’ve shared your web site in my social networks!
I feel that is among the so much significant info for me. And i am satisfied studying your article. However should commentary on some basic issues, The site style is ideal, the articles is in reality excellent : D. Excellent activity, cheers
You are not right. I am assured. I can prove it. Write to me in PM, we will talk.
You are good writer. Thank you.
Excellent read, I just passed this onto a colleague who was doing a little research on that. And he actually bought me lunch because I found it for him smile So let me rephrase that.|
Great post. I was checking constantly this blog and I’m impressed! Very useful info specifically the last part 🙂 I care for such info much. I was looking for this certain information for a very long time. Thank you and good luck.
Your resources are well developed.
Great write-up, I am a big believer in placing comments on sites to inform the blog writers know that they’ve added something advantageous to the world wide web!
Thanks so much for this, keep up the good work 🙂