নিজের বিবেচনায় কখনই কারও বিচার করা ঠিক না

(সংকলিত)

 

 

জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য ডাক পেয়ে একজন শল্য চিকিৎসক খুব তাড়াহুড়ো করে হাসপাতালে প্রবেশ করলেন। তিনি খুব দ্রুততার সাথে নিজের পোশাক পরিবর্তন করে সরাসরি সার্জারি রুমে প্রবেশ করলেন। সার্জারি রুমে প্রবেশের সময় রুমের সম্মুখে পায়চারীরত অসুস্থ বালকটির পিতাকে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় দেখলেন।

ডাক্তারকে দেখে ছেলেটির বাবা চিৎকার করে উঠলো -এতক্ষণ লাগলো আপনার আসতে? আপনি জানেন না যে আমার ছেলের জীবন সঙ্কটাপন্ন? আপনার কি কোন দায়বদ্ধতা নেই?

ডাক্তার মৃদু হেসে বললেন –আমাকে ক্ষমা করবেন এবং আমি দুঃখিত, আমি হাসপাতালে ছিলাম না, কলটি পাওয়ার সাথে সাথে আমি যতটা দ্রুত সম্ভব হাজির হয়েছি, এখন দয়া করে আপনি একটু শান্ত হন যাতে আমি আমার কাজটি করতে পারি।

-শান্ত হব! আমার না হয়ে যদি আপনার ছেলে অপারেশান রুমে থাকতো তবে কি আপনি শান্ত হতে পারতেন? আপনার নিজের ছেলে যদি ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে মারা যায় তবে আপনি কি করবেন?  ছেলেটির বাবা খুবই রাগান্বিত ভাবে বললেন। ডাক্তার আবার মৃদু হাসলেন এবং জবাব দিলেন -আমরা ঈশ্বরের অনুগ্রহে যথাসাধ্য চেষ্টা করব এবং আপনার ছেলের সুস্থ ও দীর্ঘ জীবনের জন্যও প্রার্থনা করবো।

-অন্যের বিপদে ধৈর্য ধারনের পরামর্শ দেওয়া খুব সহজ। ছেলেটির বাবা স্বগত স্বরে বিরক্তি প্রকাশ করলো।

অস্ত্রোপচার কয়েক ঘন্টা সময় নিল। ডাক্তার খুশি মুখে বের হলেন। তিনি স্মিত হেসে উদ্বিগ্ন বাবাকে বললেন -শুভকামনা! আপনার ছেলের অস্ত্রোপচার ফলপ্রসূ হয়েছে এবং সে এখন বিপদমুক্ত! ডাক্তার কোন  জবাবের অপেক্ষায় না করেই বললেন -আপনার যদি কোনও প্রশ্ন থাকে, নার্সকে জিজ্ঞাসা করবেন।

তিনি যেমনি তাড়াহুড়ো করে এসেছিলেন তেমনি তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেলেন।

ডাক্তার বেরিয়ে যাওয়ার একটু পর নার্সকে দেখে ছেলেটির বাবা বিরক্তি প্রকাশ করে মন্তব্য করলেন -ডাক্তারটি এত অহংকারী কেন? এত তাড়াহুড়োর কি ছিল, তিনি কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে পারতেন, তাহলে আমি আমার ছেলের অবস্থা সম্পর্কে আরো একটু খোঁজ খবর নিতে পারতাম।

অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে নার্স জবাব দিল -গতকাল ডাক্তারের নিজের ছেলেটি একটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে, যখন আমরা তাকে আপনার ছেলের অস্ত্রোপচারের জন্য ডেকেছিলাম তখন তিনি ছেলের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ছিলেন। এখন তিনি আপনার ছেলের জীবন বিপদমুক্ত করেছেন আর তাই তিনি নিজের ছেলের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করতে ছুটে গেলেন।

শিক্ষণীয়: নিজের বিবেচনায় কখনই কারও বিচার করবেন না, কারণ  আপনি জানেন না যে ওই মুহূর্তে তার জীবনটা কি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।

 

Source: Google

Category: Bangla, Moral Stories

Comment List

Your email address will not be published.