ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে কি?

(সংকলিত)

 

 

একজন লোক চুল কাটানো আর ছাঁটানোর জন্য একটি নাপিতশালায় গেল। নাপিত খুব আলাপী মানুষ তায় সে কাজ শুরু  করার সাথে সাথে খরিদদারের সাথে বন্ধুসুলভ কথোপকথন শুরু করলো। আলাপের বিষয়গুলো ছিল বিভিন্ন রকম মানে পাঁচমিশালী।

আলাপ ঘুরতে ঘুরতে শেষ পর্যন্ত ঈশ্বরের বিষয় নিয়ে শুরু হল। তখন নাপিত বললো -আমি বিশ্বাস করি না যে ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে।

-তুমি এটা কিভাবে বললে এর পিছনে কোন যুক্তি আছে? খরিদদার জিজ্ঞাসা করলো।   

-সেটা বুঝতে হলে আপনাকে বাস্তায় গিয়ে দাড়াতে হবে। আপনি আমাকে বলুন ঈশ্বরের উপস্থিতি থাকলে কি রাস্তাঘাটে এত অসুস্থ মানুষ দেখতে পাওয়া যেত? ঈশ্বরের অস্তিত্ব থাকলে কি রাস্তাঘাটে পরিত্যক্ত শিশুদের দেখা মিলতো? ঈশ্বর থাকলে এত কষ্ট বা বেদনা থাক্তো না। আমি এমন একজন সহানুভূতিশীল ঈশ্বরএসব অবিচার অনাচার সহ্য করবে বলে আমার মনে হয় না।

খরিদদারটি বিনা বাক্যে সব শুনলো নাপিতের সাথে অযথা তর্কে জড়াতে চাইলো না। চুল দাড়ি কাটা শেষ হলে লোকটি নাপিতের দোকান থেকে বাইরে আসলো। সামনের সে দেখলো এক ব্যক্তিকে যার লম্বা ও নোংরা চুল দাড়ি।

লোকটি ফিরে গিয়ে নাপিতের দোকানে প্রবেশ করলো এবং নাপিতকে বললো – তুমি কি জানো যে নাপিতের কোন নাপিতের অস্তিত্ব নেই।

-তুমি বোকার মত একথা কিভাবে বলছো? এই যে আমি নিজেই একজন নাপিত তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আর এই মাত্র তোমার চুল দাড়ি কেটে দিলাম!

-না না! নাপিতদের অস্তিত্ব নেই, কারণ তা যদি থাকতো তবে বাইরে দেখ ওই লোকটির মতো নোংরা লম্বা লম্বা চুল আর অযত্নে বড় হওয়া দাড়িওয়ালা লোক থাকতো না।

-তুমি ব্যপারটি ঠিক বুঝতে পারছো না, অবশ্যই নাপিতের অস্তিত্ব আছে। ব্যপারটি হলো লোকেরা সঠিক চুল দাড়ি কাটার জন্য আমার কাছে আসে না।

-তুমি সঠিক বলেছো! লোকটি নাপিতকে নিশ্চিত করলো। তুমি বিষয়টি বুঝতে পেরেছো, নাপিতের মতো ঈশ্বরও আছেন। কিন্তু মানুষেরা তাঁকে খুঁজছেও না আর তার শরণাপন্নও হচ্ছে না। আর সে জন্যই পৃথিবীতে মানুষেরএত কষ্ট এত যন্ত্রণা।

Category: Bangla, Moral Stories

Comment List

Your email address will not be published.