দৈবক্রম – ১৪
ধীরে ধীরে অনন্যা বুঝলো ও আরিফের সন্তানের মা হতে চলেছে।
কথাটা শুনে চমকে উঠলেন নাসিমা মন্ডল। এখন কি করা যায় তা নিয়ে তিনি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন।
অনেক ভাবনা চিন্তা করে স্থির করলেন মেয়েকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে ওর গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে ফেলবে। কিন্তু এতবড় একটা সিদ্ধান্ত একাকী নিতে সাহস হলো না নাসিমা মণ্ডলের।
একান্তে স্বামীকে জানালো তার চিন্তার কথাটা।
কিন্তু সরোয়ার মন্ডল কিছুতেই স্ত্রীর এহেন সিদ্ধান্তে সম্মতি দিলেন না।
স্বামীর সম্মতি না পেয়ে মানষিক ভাবে ভেঙে পড়লেন নাসিমা বেগম। অসহনীয় এক মনোপিড়ার মধ্যে তিনি এ সবের জন্য আরিফকে দায়ী করে তাকে যথাপযোগী শাস্তি দেয়ার মনোস্থির করলেন।
ধৌর্য্যরে পরিচয় দিল অনন্যা। সিদ্ধান্তটা নিজেই নিল সে। খুব শান্ত কন্ঠে বললো-ঠিক আছে মা, আরিফের সন্তানের জন্ম আমি দেব। আর ও ভূমিষ্ট হওয়ার পর ওকে তালাক দিয়ে ওর সন্তান ওকে ফিরিয়ে দেব।
আশ্বস্ত হলেন নাসিমা মন্ডল। ভাবলেন- একদিকে ভালোই হলো। বাচ্চা হওয়ার পর পরই মেয়েকে তিনি লন্ডন নিয়ে যাবেন তারপর আস্তে ধীরে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।
অসহ্য যন্ত্রণায় পুড়ে পুড়ে একটা কন্যা সন্তানের জন্ম দিল অনন্যা।
-আপনার একটা কন্যা সন্তান হয়েছে।
লেবার রূমে নার্সের কন্ঠটা ওর কানে যেন স্বর্গীয় সুধা ঢেলে দিল। আরিফের কথা মনে পড়লো। ও ভারী সখ প্রকাশ করেছিল ওদের একটা মেয়ে হবে বলে। আরিফ আরো বলেছিল ওর মারও নাকি মেয়ের খুব সখ।
-মেয়ে হলে ওর নাম রাখবো ভাবনা। আরিফের কণ্ঠটা ওর কানে বাজলো।
অনন্যার খুব সখ ছিল ছেলের। তায় ও জিজ্ঞেস করেছিল- আর ছেলে হলে কি নাম হবে!
মৃদু হাসলো আরিফ। বললো না কিছু কারণ ছেলের কোন নাম ঠিক করা ছিল না ওর।
আরিফের কথা খুব মনে পড়তে লাগলো অনন্যার।
-আজ যদি থাকতো আরিফ কি খুশীইনা হত!
দুচোখ বয়ে অশ্রুধারা গড়িয়ে পড়তে লাগলো অনন্যার।
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর অনেক্ষন ধরে মেয়েকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন নাসিমা মণ্ডল।
-মা তোর পরীক্ষার দিন শেষ। কি চায়লাম আর কি হলো। তোর জন্য লণ্ডনের টিকিট কাটতে দিয়েছি।
-তোর মেয়ের কথা চিন্তা করিসনে, ওতো তোরও রক্ত। আমার কাছেই থাকবে ও। ওর একটা ব্যবস্থা করে এখানকার পাঠ চুকিয়ে দিয়ে তোর বাবাকে নিয়ে আমিও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লণ্ডনে চলে আসবো।
কাঁদতে লাগলেন নাসিমা মণ্ডল।
-ওর একটা নাম রাখা দরকার। শান্ত কণ্ঠে বললো অনন্যা।
-যাদের জিনিস তারাই রাখুক নামটা।
-ভাবনা ওর নাম। ও নামেই তোমরা ডাকবে ওকে।
অনন্যার শান্ত কিন্তু দৃঢ় কণ্ঠটা চমকে দিল নাসিমা মণ্ডলকে।
প্রায় মাস দেড়েক বয়সের মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে অনন্যা চলে গেল সূদূর লণ্ডনে।
দেশে থাকতে অতটা কখনো মনে পড়েনি আরিফকে। অভিমান, রাগ, ভালবাসা সব কিছুর একটা মিশ্রন ওর সন্তানকে দশ মাস একাকী গর্ভে ধারণ করার শক্তি ও ধৈর্য্য যুগিয়েছিল। তখন মনে হতো আরিফ ওই শহরের কোথাও আছে। সব খবরই হয়তো রাখছে হয়তো আড়াল থেকে সব কিছু দেখে সেও কষ্ট পাচ্ছে নীরবে।
-কিন্তু এখন! আরিফ হয়তো জানেও না আমি ওর থেকে আজ এত দূরে। নিশ্চয় খুব কষ্ট পাবে যখন জানবে সব। আরো কষ্ট পাবে যখন জানবে ওর দুধের মেয়েকে ওভাবে ফেলে আমি চলে এসেছি। আরিফ অপরাধ করেছে তায় শাস্তি ওর প্রাপ্য। কিন্তু ভাবনাকে কি অপরাধে ওর জন্মগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ওই নিস্পাপ শিশুকে ওভাবে ফেলে আসলো!
বুকটা ব্যথায় ফেটে যেতে লাগলো।
-ভাবনাকে কি ভাবে বাচিয়ে রাখবে ওরা! কি ভাবে মানুষ করবে ওকে!
এসব চিন্তা সব সময় আচ্ছন্ন রাখে অনন্যাকে। আর সারাক্ষন দুচোখ বয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।
উকিলকে দিয়ে তালাকনামাটা লিখিয়ে লণ্ডনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে মা দিয়েছিল ওকে সই করতে। ওটা পড়ে সই করবে বলে পেন চায়লো অনন্যা। তারপর কি ভেবে পরে সই করার কথা বলে নিজের কাছে রাখলো কাগজটা।
এ নিয়ে আর জোরাজোরি করেনি নাসিমা মণ্ডল তখন। তাছাড়া অনন্যা ওটা সাইন করবে বলে শান্ত কণ্ঠে জানালো মাকে।
তালাকনামাটা ওই অবস্থায় আছে ওর কাছে। সময়মত সাইন করে ওর ভাই রাজ্জাককে দিলেই হবে বলে মা জানিয়েছে ওকে।
দেশের সব কিছুরই একটা ব্যবস্থা করে মাস ছয়েকের মধ্যে স্বামীকে নিয়ে এদেশে পাড়ি জমালেন নাসিমা মণ্ডল। দীর্ঘদীন পর পরিবারের সবাই একত্রে হওয়াই আনন্দের বন্যা বয়ে যেতে লাগলো।
গোলাপ মিয়াও আসলো সে আনন্দের ভাগীদার হতে। তিনি অনন্যাকে খুশি করার জন্য বললেন- দেখবা মামনি লণ্ডনের টেমস নদীর পাড়ের হাওয়া আর আমার হোটেলের খাবার মাঝে মদ্ধ্যে খাইলে সব ঠিক হইয়া যাবে, তোমার শরীর আর অমন শুকনো থাকবে না।
গোলাপ মিয়া তার বন্ধু জনাব আলীর ছেলে দৌলত আলীর কথাও আলাপ করলেন- আমি মনে করি সব খোলামেলা আলাপ করাই ভাল। তাছাড়া এখনতো আর সে যুগ নেই যে বাবা মায়ে সব ঠিকঠাক করলো আর ছেলেমেয়েরা বললো আলহামদুলিল্লাহ। কি বলেন বেয়ান সাব। ছেলেমেয়ে কথা বলবে সরাসরি। আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমার বন্ধুর পরিবার আর আপনাদের সবাইকে আমার বাড়ীতে দাওয়াতের ব্যবস্থা করছি। আশা করি এক ছিটিংএ সব হইয়া যাবে। না হইলেও সমস্যা নেই আমাদেরতো আর রান্না ভাত ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে না।
শব্দ করে হাসলেন গোলাপ মিয়া।
-আমি ওদেরকে বলেছি অনন্যা মামনির আগের কথা কিছুটা।
সবাই তাকালো গোলাপ মিয়ার দিকে।
-আরে না না অত কাচা কাজ আমি করিনা। আর ব্যপারটাতো পুরোপুরি গোপন করাও ঠিক হবে না, কি বলেন।
গোলাপ মিয়া নিশ্চিন্ত করতে চায়লো সবাইকে। হাতের পানটা মুখে পুরে চিবিয়ে নেয়ার জন্য থামলো একটু। সবায় তাকিয়ে তার দিকে।
-দোষ সবটায় মোটামুটি আগের জামাই বাবাজিকে দিয়েছি। আর দোষতো তারই যার জলজ্যান্ত প্রমানতো এই লণ্ডন শহরেই হাজির আছে। তবে বুঝেনতো এক হাতে তালি বাজানোর ব্যপারতো আর বিশ্বাস করে না কেউ, আর পুরূষ মানসের একাধিক বিবাহ নাযায়েজ না। তায় সব মিলাইয়া কিছু মনগড়া কথা আমি বলেছি ওপক্ষকে।
একটু থামলো গোলাপ মিয়া।
-তা ও নিয়ে আপনাদের চিন্তা করবার কোন দরকার নায়। সেটা আমি আর আমার বন্ধুর ভিতরেই থাক। মোট কথা হইলো গিয়া আমাদের মেয়ের গায়ে আচড় না লাগলেই হলো।
পানটা চিবিয়ে পাশে রাখা পিকদানিতে পিক ফেললো গোলাপ মিয়া।
-লণ্ডন অনেক দূর। এখানে কেউ অত সব পরীক্ষা করবে না। আর এ ব্যপারে আমার কথায় বন্ধুর কাছে ফাইনাল।
নীরবে উঠে দাড়ালো অনন্যা। কিছু না বলেই ধীর পায়ে উপরে চলে গেল।
সরোয়ার মণ্ডল আর তার স্ত্রী নীরবে দৃষ্টি বিনিময় করলো।
-লজ্জা পায়ছে মামনি, বেয়ান সাব। এ যুগের মেয়ে হইলে কি হইবে মামনিকে দেখেই বোঝা যায় যে ও লাজুক প্রকৃতির।
অনন্যা এ যুগের মেয়েদের মত নয় সেটা ভাল করেই জানে ওরা দুজনই। তবে লজ্জা পেয়ে যে অনন্যা উঠে যায়নি সেটা অন্য কেউ না বুঝলেও বাবা মায়ের চোখ তা এড়াতে পারেনি।
-মেয়ের ব্যপারে তিনি কি ভুল সিদ্ধান্ত নিলেন! বিয়েটা ঠিক করলেন তিনি আবার ভাঙলেনও তিনি। এব্যপারে অনন্যা আর তার বাবা নাসিমা মণ্ডলের সব সিদ্ধান্তই কোন কথা না বলেই মেনে নিয়েছ। কোন বাধাও দেয়নি বা পাল্টা কোন প্রস্তাবও ছিল না তাদের।
অনন্যার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার ব্যপারে সিদ্ধান্ত নিয়েও স্বামীর আপত্তি মেনে নিয়ে অনন্যার সিদ্ধান্ত মতোই সব হয়েছে।
-কোন কিছুইতো কারো অমতের বিরূদ্ধে চাপিয়ে দেননি তিনি। কথাটা ভেবে নিজেকে হালকা করতে চায়লেন নাসিমা মণ্ডল।
নিজ চোখে যে প্রমান তিনি দেখেছেন তা কি ভাবে এড়িয়ে যাবেন। জেনে শুনে মেয়ের এতবড় সর্বনাস মা হয়ে কি ভাবে মেনে নেবেন তিনি! ভাবনার জগতে ডুবে থাকায় অন্য আর কোন আলোচনায় তার কানে প্রবেশ করলো না।
নাসিমা মণ্ডলকে অন্যমনস্ক দেখে গোলাপ মিয়া একটু শব্দ করে কেসে গলাটা পরিস্কার করলেন।
-বেয়ান সাব অত চিন্তা করেন কেন, মেয়েতো আমাদের পানিতে পড়ে নাই। এত তাড়াহুড়ারও কিছু নাই। আঘাতটা সহ্য করার জন্য অনন্যা মামনিকে একটু সময়ও দেয়া দরকার। এইটা নিয়া একটুও দুশ্চিন্তা করবেন না। শুধু অনন্যা মামনিকে শক্ত হওয়ার জন্য সাহায্য করা দরকার।
মাথা নেড়ে সাঈ দিলেন নাসিমা মণ্ডল।
বিষয়টা নিয়ে সারা রাত ভাবলেন তিনি। সবকিছু একদম গোড়া থেকে। স্বামীর সাথেও আলাপ করলেন।
তার নিজ চোখে দেখা জামিল অর্থাৎ আরিফের ছেলে, বাবার সাথে চেহারার হুবুহু মিল। তার উপর শাহেদ সরকার অর্থাৎ আরিফের চাচা তো পরিস্কার ভাবে বললো সবকিছু।
অনন্যার বিয়ে ঠিক করার সময় নাসিমা মন্ডল নিজে গিয়েছিলেন ওদের বাড়ীতে। শহিদ সরকার আর তার স্ত্রী সালমা বেগমের সাথে বেশ কয়েকবার আলাপ হয়েছে সব কিছু নিয়ে। ভারী চমৎকার আর বংশীয় মানুষ ওরা। ছেলেকে বিয়ে দেয়ার ব্যপারে অত আগ্রহ অবশ্য ছিল না ওদের। অমন সুশ্রী উপযুক্ত ছেলে তায় ওটা ছেলে পক্ষের একটা দেখানো গাম্ভীর্য ভেবে পাত্তা দেয়নি তখন।
কিন্তু ছেলে সম্পর্কে অত বড় একটা সত্য ওরা গোপন করলো কি ভেবে! একদম ঠান্ডা মাথায় ওরা এমন কাজ করবে!
সারা রাত ধরে স্বামীর সাথে আদ্যপান্ত আলাপ করেও মিলাতে পারলেন না কোন কিছু।
কোথাও যেন একটু ভুল হচ্ছে মনে হলো ওদের। অনন্যারও ওই একই সন্দেহ।
যতটুকু হয়েছে হয়েছে, এ ব্যপারে আর কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সব কিছু ভালো করে দেখে নেয়া দরকার বলে একমত হলো সবাই। সময় সব কিছু ঠিক করে দেবে বলেও সবাই মন্তব্য করলো।
সবার চিন্তা ভাবনাকে মিথ্যে প্রমান করে এতদিন ধরে নিজেকে নিজের জগতে গুটিয়েই রাখলো অনন্যা। অনন্যা এখন বিয়ের কথা ভাবছে না বলে জানাল। কেউ ওকে এব্যাপারে চাপাচাপি করবে না বলে জানাল ওর মা বাবা।
আরিফের চাচার বাড়ীতে যেয়ে সব কিছু নিজ চোখে দেখতে চায় বলে শান্ত কণ্ঠে জানালো অনন্যা। এতে কোন ফল হবে না জেনেও এ সময়ে মেয়ের কোন ইচ্ছার বিরূদ্ধে যাওয়া ঠিক হবে না ভাবলেন নাসিমা মন্ডল। এ যাবত তার নিজের সব সিদ্ধান্তই বিনা প্রশ্নে মেনে নিয়েছে অনন্যা। তার জন্যই ওর এত বড় সর্বনাস। ভাবলেন নাসিমা মন্ডল।
-এ ব্যপারে তোর কোন প্রচেষ্টায় আমি বাধা দেব না মা, তোর সুখই আমাদের একমাত্র কাম্য। আমার একগুয়েমির জন্যই তোর এতবড় সর্বনাস!
কাদতে লাগলেন নাসিমা বেগম।
এখন কি ভাবে ওবাড়ীতে যাবে অনন্যা। কোন পরিচয়ে আর কি উদ্দেশ্যের কথা বলবে। কেউ কোন সমাধান খুজে পাচ্ছিলো না।
স্কুল জীবন থেকেই গানে খুব পারদর্শী অনন্যা। রবিন্দ্রনাথের গানের উপর অনন্যা ডিপ্লোমা করেছিল। ওর গানের গলাও চমৎকার। মুলত সময় কাটানোর জন্যই বাংলাদেশীদের একটা গানের স্কুলে যোগদান করল।
এ ভাবেই কাটল বেশ কয়েকটা বছর।
I had a long career in Army. I was trained to follow orders, instructions and set rules, taking those as axiomatic. That strayed me a bit from free thinking as happens with all technology users. Basically I am a free thinker always and now in search of some basic truth in my own way. ([email protected]).
Such an amazing blog! Very informative!
Well, I don’t know if that’s going to work for me, but definitely worked for you! 🙂 Excellent post!
A wholly agreeable point of view, I think primarily based on my own experience with this that your points are well made, and your analysis on target.
Some truly interesting info , well written and broadly user genial .
Good day! This is my first comment here so I just wanted to give a quick shout out and say I really enjoy reading through your articles. Can you recommend any other blogs/websites/forums that cover the same subjects? Thanks a lot!
Hi there! I just wanted to ask if you ever have any trouble with hackers? My last blog (wordpress) was hacked and I ended up losing several weeks of hard work due to no back up. Do you have any solutions to protect against hackers?
While this issue can vexed most people, my thought is that there has to be a middle or common ground that we all can find. I do value that you’ve added pertinent and sound commentary here though. Thank you!
My brother suggested I might like this websiteHe was once totally rightThis post truly made my dayYou can not imagine simply how a lot time I had spent for this information! Thanks!
Thanks a bunch for sharing this with all people you really recognize what you are talking about! Bookmarked. Kindly also seek advice from my web site =). We can have a link alternate contract between us!
Hi, possibly i’m being a little off topic here, but I was browsing your site and it looks stimulating. I’m writing a blog and trying to make it look neat, but everytime I touch it I mess something up. Did you design the blog yourself?
Our community leaders need to read this, and look at developing some of your recommendations.
Write more stories, more chapters.
Woh I enjoy your content , saved to bookmarks!
whoah this weblog is wonderful i like reading your articles. Keep up the good paintings! You already know, many people are looking around for this information, you can help them greatly.
Spot on with this write-up, I truly believe this website requirements a lot much more consideration. I’ll probably be once more to read much much more, thanks for that info.
I have been curious about these trends, and you have really helped me. I have just told a few of my friends about this on FaceBook and they love your content just as much as I do.
I just added your web site to my blogroll, I hope you would look at doing the same.
Thank you pertaining to sharing the following great subject matter on your website. I ran into it on google. I am going to check to come back after you publish additional aricles.
I loved your idea there, I tell you blogs are so exciting sometimes like looking into people’s private life’s and work. Every new remark wonderful in its own right.
Lovely just what I was looking for. Thanks to the author for taking his clock time on this one.