১.১১ ডলার দামের অলৌকিক ঘটনা – একটি সত্য ঘটনা

(অনূদিত)

 

টেস আট বছর বয়সী একটি ছোট্ট  ডানপিঠে স্বভাবের মেয়ে। একদিন সে আড়ালথেকে তার মা এবং বাবাকে তার ছোট ভাই  অ্যান্ড্রু সম্পর্কে কথা বলতে শুনলো। কথা শুনে টেস যেটা বুঝল সেটা হল যে তার ছোট ভাই খুব অসুস্থ এবং তার চিকিৎসা করা তাদের আর্থিক সামর্থ্যের বাইরে। বাবা মা আরো  আলোচনা করল যে, পরের মাসে এই বড় বাসা ছেড়ে তারা একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে চলে যাবে কারণ ডাক্তারের বিল এবং এই বাড়ি ভাড়ার জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা নেই। কেবলমাত্র একটি ব্যয়বহুল অপারেশান তার ভাইকে বাঁচাতে পারে যার জন্য অনেক টাকার দরকার কিন্তু এ সময়ে ধার দেয়ার মত তাদের আপন কেউ ছিল না।  

 -কেবলমাত্র এখনই একটি অলৌকিক ঘটনা তাকে বাঁচাতে পারে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বাবা কান্না জড়িত কণ্ঠে কথাগুলো মাকে বলতে শুনল। 

টেস তার শোবার ঘরে গেল এবং গোপন জাইগায় লুকানো একটি কাচের জেলি জার বের করে তার ভিতর রক্ষিত সমস্ত খুচরা টাকা মেঝেতে ঢেলে গুনল। টাকাগুলো সে কয়েকবার নির্ভুলভাবে গণনা  করল। সে কয়েনগুলি সাবধানে জারে উঠিয়ে রেখে তার টুপির ভিতর সেটা মুড়ে নিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে  বেরিয়ে ৬ টি ব্লক পরে একটি ড্রাগ স্টোরে গেল। 

স্টোরের ফার্মাসিস্ট সে মুহুর্তে খুব ব্যস্ত ছিল বিধাই টেসকে কিছুটা সময় ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হল। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর টেস কাসি দিয়ে এবং মেঝেই পা ঠুকে ফামাসিস্ট এর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেও বার্থ হল।

ফার্মাসিস্ট এর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অবশেষে সে তার জার থেকে একটি কয়েন বের করে কাউন্টারের কাচের উপর ঠক ঠক করে  শব্দ করল এবং তাতে কাজ হল।   

-তুমি কি জানতে চাও? ফার্মাসিস্ট বিরক্ত স্বরে বলল। -আমি শিকাগো থেকে আসা আমার ভাইয়ের সাথে কথা বলছি যাকে আমি অনেক যুগ পর দেখছি।

-তা ঠিক আছে কিন্তু আমি আপনার সাথে আমার ভাইয়ের ব্যাপারে জরুরি কথা বলতে চাই। টেস একটু বিরক্ত স্বরে উত্তর দিল। -আমার ভাই সত্যি  সত্যিই খুব অসুস্থ … এবং আমি একটি অলৌকিক জিনিস কিনতে চাই।

-আমার ভায়ের নাম অ্যান্ড্রু এবং তার মস্তিকের ভিতরে ক্ষতিকারক কিছু একটা বড় হচ্ছে এবং আমার বাবাকে বলতে শুনেছি এখন কেবল একটি অলৌকিক কিছু তাকে বাঁচাতে পারে। আমি জানতে চায় একটি অলৌকিক কিছুর মূল্য কত?

-আমরা এখানে অলৌকিক কিছু বিক্রি করি না। আমি দুঃখিত যে তোমাকে আমি কোন সাহায্য করতে পারছি না। ফার্মাসিস্ট কিছুটা নরম স্বরে উত্তর দিল।

-আপনি চিন্তা করবেন না, অলৌকিকের মূল্য দেওয়ার জন্য আমার  কাছে যথেষ্ট টাকা আছে। যদি যা আছে তা পর্যাপ্ত না হয় তবে চিন্তা করবেন না আমি বাকিটি জোগাড় করতে পারবো।  এটির দাম কত শুধু সেটা আমাকে বলুন।  

দামী পোষাক পরিহিত ফার্মাসিস্ট এর ভাই যিনি এতক্ষণ সব কিছু শুনছিলেন তিনি নিচু হয়ে ছোট মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করলেন -তোমার ভাইয়ের কী ধরণের অলৌকিক জিনিসের দরকার আমাকে বুঝিয়ে বলতো? 

-আমি জানি না। টেস অশ্রু সিক্ত চোখে উত্তর দিল। -আমি কেবল জানি যে সে খুবই অসুস্থ এবং মা বলেছে তার অপারেশন করা দরকার। তবে আমার বাবার কাছে অত টাকা নেই। তায় আমি আমার অর্থ ব্যবহার করতে চাই।

-তোমার কাছে কত টাকা আছে? শিকাগো থেকে আসা লোকটি  জিজ্ঞাসা করল। -এক ডলার এবং এগারো সেন্ট। টেস নিচু স্বরে উত্তর দিল। -আমার কাছে থাকা সমস্ত অর্থ এটিই তবে চিন্তা করবেন না প্রয়োজন হলে আমি আরও কিছু জোগাড় করতে পারবো। 

– কি কাকতালীয় ঘটনা। লোকটি মৃদু হাসল। – কী বিশ্বয়কর ব্যাপার দেখ, তোমার ছোট ভাইদের জন্য অলৌকিক জিনিসের সঠিক মূল্য এক ডলার এবং এগারো সেন্ট। 

– তিনি টেসের কাছ থেকে টাকা গুলো এক হাতে নিয়ে অন্য হাত দিয়ে তিনি টেসের একটি  হাত ধরে বললেন – তুমি যেখানে  থাক সেখানে আমাকে নিয়ে চল। আমি তোমার ভাইকে দেখতে আর তোমার পিতামাতার সাথে কথা বলতে চাই। দেখি তোমার ভাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অলৌকিক জিনিস আমার কাছে আছে কিনা? 

সেই সুন্দর পোশাক পরিহিত মানুষ ছিলেন ডক্টর কার্লটন আর্মস্ট্রং, একজন সার্জন, নিউরো-সার্জারি বিশেষজ্ঞ। তিনি বিনা মূল্যে  অপারেশনটি সম্পন্ন করলেন এবং কিছু দিনের মধ্যেই অ্যান্ড্রু পুনরায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলো।

-সেই সার্জারি! টেসের  মা ফিসফিস করে বললেন। -একটি বাস্তব   অলৌকিক ঘটনা ছিল। আমি ভাবছি যে এর জন্য কত  দাম দিতে হবে?

মায়ের কথা শুনে টেস হাসল। কারণ সে সঠিক জানতো অলৌকিক কাজের জন্য কত খরচ হয়েছে … এক ডলার এবং এগারো সেন্ট …… এর সাথে একটি ছোট নিস্পাপ শিশুর বিশ্বাস।

Category: Bangla, Moral Stories

Comment List

Your email address will not be published.